ভাগ্য আসলে কী (বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে)
- Sumeru Ray (MahaManas)
- Sep 28, 2019
- 2 min read
ভাগ্য : বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে (ভাগ্য সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা) ~সুমেরু রায় (মহর্ষি মহামানস)

ভাগ্য হলো~ মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে মহাবিশ্ব-সৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথেই স্বয়ংসৃষ্ট--- স্বয়ংক্রিয় এক জাগতিক ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায়, ঐ বিস্ফোরণের মূহুর্তেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হয়ে যায়--- পরম্পরাগত ঘটনাক্রমে কখন--- কোথায়--- কী ঘটবে। এরই নাম ভাগ্য। এই ভাগ্য হলো একটি ভার্চুয়াল অস্তিত্ব।
এখানে যাকিছু ঘটছে, সব কিছুর মূলে রয়েছে ভাগ্য, ভাগ্যই সব কিছুর জন্য দায়ী। আর এই ভাগ্য পূর্ব নির্ধারিত এবং অপরিবর্তনীয়। তবে, ভাগ্যকে কার্যকর ফলবৎ হতে, বিভিন্ন কার্য-কারণের ভিত্তিতে, পরিবেশ- পরিস্থিতি সাপেক্ষে, যুক্তি-বিজ্ঞানের পথ ধরেই অগ্রসর হতে হয়। ভাগ্যের জন্যেই আমরা কেউ সুখী -কেউ দুঃখী, কেউ সফল –কেউ অসফল৷ ভাগ্যের জন্যেই আমাদের এত দুঃখকষ্ট-যন্ত্রনা। তাই, ভাগ্যকে খুব ভালোভাবে জানা প্রয়োজন৷
আসলে ভাগ্য হলো, কোনো ঘটনার মধ্য দিয়ে স্বতঃসম্ভুত একপ্রকার ব্যবস্থা, যা স্থান-কাল-পাত্র, পরিবেশ-পরিস্থিতি সাপেক্ষে, পরম্পরাগত ঘটনাবলীর কার্য-কারণ ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কার্যকর হয়ে, অবশ্যম্ভাবি ভাবী ঘটনা বা ঘটনাবলীর অমোঘ নির্ধারক।
জাগতিক বা মহাজাগতিক ক্ষেত্রে: ভাগ্য হলো- আদি মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে জগৎ সৃজন শুরু হওয়ার মুহূর্তে উৎপন্ন হওয়া – অবশ্যম্ভাবি ভাবী ঘটনাবলীর নির্ধারক ও নিয়ামক রূপ একপ্রকার অনৈচ্ছিক শক্তি অথবা স্বতঃসৃষ্ট প্রোগ্রাম৷
প্রতিটি উৎপাদিত ঘটনা, তার সাথে সম্পর্কযুক্ত পরবর্তীকালে উৎপন্ন হওয়া বিভিন্ন ঘটনার আপাত কারণ। যা মহাবিশ্ব সৃষ্টির শুরুতে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পূর্বনির্ধারিত হয়ে আছে।
বোঝাবার সুবিধার্থে, একটি সহজ নিদর্শন দিয়ে বলি, একটি তীরের ফলক যুক্ত ঘূর্ণমান চক্রের ঘুর্ণনক্রিয়া শুরু হওয়ার সাথেসাথেই স্বতঃই নির্ধারিত হয়ে যায়, তীরের ফলকের তীক্ষ্ণ কোণটি কখন এবং ঠিক কোথায় গিয়ে স্থির হবে৷ এ-ই হলো ভাগ্য এবং পূর্বনির্ধারিত ঘটনা। মহাসৃষ্টি বা জাগতিক ঘটনার ক্ষেত্রেও প্রায় অনুরূপ। সৃষ্টির শুরুতে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই তার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গেছে।
ভাগ্য আমাদের ভিতরে বাইরে, জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন দিক থেকে ক্রিয়াশীল। আমাদের চিন্তা-ভাবনা, ইচ্ছা-অনিচ্ছা সহ আমাদের সমস্ত কার্যকলাপ ভাগ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং তা জাগতিক কর্মকান্ডেরই অংশ।
আমরাও এই জগতেরই একটা অংশ৷ এখানে, ভাগ্যক্রমে বা ঘটনাক্রমে কেউ ধনী ---কেউ দরিদ্র, কেউ মহৎ আবার কেউ অসৎ। তা-ই বলে এর পিছনে কোনো নিয়ন্তা বা নির্ধারক ও নিয়ামক চেতন সত্তা নেই, আছে স্বতঃসৃষ্ট এক যান্ত্রিক ব্যবস্থা।
মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়েই সৃষ্টির শুরু, আর সেই বিস্ফোরণের ক্ষণটিতেই জন্ম নেয় ভাগ্য নামক এক ভার্চুয়াল অস্তিত্ব। যেমন, একটি বোমা বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে ঘটে থাকে একের পর এক নানা ঘটনা। বিস্ফোরণের মূহুর্তেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হয়ে যায়, তারপরে কি ঘটবে, এবং তারও পরে পরম্পরাগতভাবে একের পর এক কি-কি ঘটতে থাকবে। এই জগতে যা কিছু ঘটছে এবং যা কিছু ঘটবে সে সমস্ত কিছুই নির্ধারিত হয়ে গেছে --- বিস্ফোরণের মুহুর্তে প্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে।
একটা ঘটনা থেকে জন্ম নেয় একাধিক ঘটনা। সেইসব ঘটনাগুলি থেকে একের পর এক জন্ম নিতে থাকে আরো অনেক ঘটনা। এইভাবে সাকসেসিভ স্ত্রিম অফ ইভেন্টস চলতে থাকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো ঘটনা হতে উদ্ভূত বিভিন্ন ঘটনাবলী শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে কোন নির্দিষ্ট পথ ধরে এগিয়ে যেতে পারবে না। বহিরাগত অথবা এর বাইরে সৃষ্ট অন্যান্য ঘটনা, বিষয়-বস্তু, শক্তি প্রভৃতি তার বা তাদের চলাকে বিঘ্নিত করে বা প্রভাবিত করে অথবা যুক্ত হয়ে ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেবে।
তাই, এখানে উল্লেখিত উদাহরণ শুধুনাত্র উদাহরণই। আমার আলোচ্য মূল ঘটনার সঙ্গে এই উদাহরণের খুব বেশি সাদৃশ্য থাকবে না। আলোচ্য মূল ঘটনাটি হলো— মহাবিশ্ব-সৃষ্টি শুরুর মূহুর্তে ঘটা মহাবিস্ফোরণ! যা বিগ-ব্যাঙ নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে, মূল ঘটনা এবং তা’ থেকে সৃষ্ট অসংখ্য ঘটনাবলীকে প্রভাবিত করার মতো বাইরের কোনো বিষয়-বস্তু, শক্তি বা ঘটনা অনুপস্থিত। এখানে ঘটনাক্রম এগিয়ে চলেছে সুশৃঙ্খল্ভাবে স্বয়ং-নির্ধারিত পথ ধরে।
Comments