প্রত্যেক চেতনসত্তার ধর্ম— তার চেতনস্তরের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল Every conscious existence’s ‘Dharma
প্রত্যেক চেতনসত্তার ধর্ম— তার চেতনস্তরের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল
Every conscious existence’s ‘Dharma’ depends on its conscious level– largely.
সব কিছু সবার জন্য নয় –সবার উপযোগী নয়। মহাধর্মের ক্ষেত্রেও একথা খাটে। মহাধর্ম শুধু তাদের জন্যই, -যাদের মনোবীণার সুরের সাথে –এর সুরের, এর কম্পনাঙ্কের মিল আছে। মহাধর্মকে যাদের ভালো লাগে বা লাগবে, মহাধর্ম শুধু তাদের জন্যই। এই ধর্ম জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার ধর্ম নয়।
বিশ্বাস প্রবণ- ধর্ম প্রবণ মানুষদের জন্য অনেক ধর্ম – অনেক ধর্মগুরু আছেন। তাদের নিয়ে মহাধর্ম বিশেষ চিন্তিত নয়। -এর বাইরে যে জগৎ আছে, -যারা আছে মাঝখানে, মহাধর্ম তাদের কথাই বেশী ভাবে। এছাড়া, মানব জাতির বয়স বাড়ছে – সেই সাথে মানব মনেরও বয়স বাড়ছে ক্রমশ। সেই বয়ষ্ক মন– মায়ের আঁচল তলের নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে বেড়িয়ে এসে– এই জগতটাকে দেখতে চায় – বুঝতে চায়, –নিজেকে জানতে চায়, –মহাধর্ম মূলতঃ তাদের কথা ভেবেই।
বিভিন্ন চেতনস্তরের— মন বা চেতনসত্তার ধর্মও ভিন্ন ভিন্ন। যেমন— বরফের ধর্ম, জলের ধর্ম এবং বাষ্পের ধর্মের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যে ব্যক্তি যে চেতনস্তরে অবস্থান করছে, তার ধর্মও তদনুরূপ। যে যা করছে, সবই সে করতে বাধ্য— তাই করছে। অন্য চেতন স্তরের ধর্ম তার কাছে আশা করাই ভুল। সবাই নিজের নিজের ধর্ম অনুযায়ী কর্ম ক’রে চলেছে।
তবু, জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতার কারণে —এই ভুল আমরা অনেকেই করে থাকি। উচিত— অনুচিত, ঠিক-বেঠিক নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, বিচার-আলোচনায় মেতে উঠি আমরা। হ্যাঁ, এটাও কিন্তু এই চেতন স্তরের মানুষের পক্ষে একেবারে স্বাভাবিক, –এটাই তাদের স্বভাব ধর্ম।
যুক্তিসম্মত আধ্যাত্মিকতা ভিত্তিক ধর্ম — ‘মহাধর্ম’ কখনোই কোনো ধর্মকে ছোট, কোনো ধর্মকে বড়, অথবা নিজেকে বড় বলেনা। তবে সে তার অনুগামীদের কাছে সত্যকে যথাসম্ভব উন্মোচিত ক’রে— তুলে ধরতে চেষ্টা করে। অবশ্য এতে কেউ কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারে। কিন্তু এই সত্য –এই ধর্মমত তো তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তারা তাদের সত্যে —তাদের বিশ্বাসে অবিচল থাকুক !
আসলে, আমাদের এই সত্য —অসত্য –এসবই আপেক্ষিক ব্যাপার। আমার কাছে যা সত্য —অপরের কাছে তা’ সত্য নয়। তাই, আপাত সত্যের হাত ধ’রে বিকাশের পথে— পরম সত্যের লক্ষ্যে এগিয়ে চলাই মহাধর্মীদের কাজ।
যুক্তি-বিজ্ঞানের পথ ধরেও যে ঈশ্বর উপলব্ধি সম্ভব, যুক্তি সম্মত আধ্যাত্মিকতার পথে অগ্রসর হয়েও— আধ্যাত্মিক উন্নতি— আত্মবিকাশ লাভ সম্ভব, –যুক্তিবাদী —বিজ্ঞান মনষ্ক —মুক্ত মনের মানুষদের কাছে তা’ তুলে ধরা এবং সেই পথে সাফল্যের সাথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করাই মহাধর্মের মূল উদ্দেশ্য।
যা হচ্ছে— সবই যখন ঠিক ঠিক ভাবে ঘটে চলেছে, যা হবার ঠিক তা-ই হচ্ছে, তবে আবার এর প্রয়োজন হলো কেন ? জাগতিক নিয়মেই— কালের চাহিদা মতো, অনিবার্য কারণেই এর সূচনা হয়েছে। ঈশ্বর তথা জাগতিক ব্যবস্থা না চাইলে— কিছুই সম্ভব হয়না। জাগতিক নিয়মে— সময়ের চাহিদা মতোই ধর্ম বিপ্লব সম্ভব হয় যুগে যুগে !