অন্ধ-অবুঝ ভালবাসা আর সচেতন ভালবাসা
অনেক প্রকারের ভালবাসা আছে। অন্ধ-অবুঝ ভালবাসা, সচেতন ভালবাসা প্রভৃতি। একজন মা— তার ছেলেটিকে খুব ভালবাসে। ছেলে যখন যা চায়, সে তা-ই এনে দেয় তাকে। ছেলে সর্বক্ষণ আবোল-তাবোল বিষয়—বস্তু নিয়ে মেতে থাকলে, অন্ধ-বিশ্বাস –কুসংস্কারে মজে থাকলে– মায়ের খুব আনন্দ! ছেলে যেমন আচরণই করুক না কেন, সবই তার খুব ভাললাগে! এমনকী, ছেলের অসদাচরণেও সেই মা গর্ব বোধ করে থাকে, এবং সবাইকে বড়মুখ করে– ছেলের সেইসব কীর্তি-কলাপের কথা বর্ণনা করে থাকে!
এই ছেলেটির বাবা– সেও তার ছেলেকে খুব ভালবাসে কিন্তু তার মধ্যে ভালবাসার উচ্ছলতা নেই, নেই কোনো আদিখ্যেতা। বরং, সে তার ছেলের বয়স অনুপাতে কম বুদ্ধি –কম চেতনার জন্যে খুবই চিন্তিত, এবং বিভিন্ন সময়ে অসদাচারণের জন্যে– ভিতরে ভিতরে সে অসুখী। অসন্তুষ্ট তার স্ত্রীর আচরণেও! সে চায়, তার ছেলে যেন বিপথগামী না হয়ে– জ্ঞানে-গুণে সমৃদ্ধ এবং সদাচারণে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। সুস্থ থাকে। আর, কালক্রমে পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে উঠতে পারে।
তার জন্যে সে তাদের অনেক কাজেই প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। আর সর্বদাই চেষ্টা ক’রে চলে– যাতে করে তার ছেলে একজন মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু, ছেলে আর তার মা ভাবে, ‘বাবা’ ছেলেকে মোটেই ভালবাসে না!
মানুষের প্রতি আমার ভালবাসাও ঐ বাবাটির মতোই। তাই, আপাতদৃষ্টিতে অনেকেরই মনে হতে পারে– আমি মানুষকে ভালবাসি না।