বিচার-ব্যবস্থা্র উপর আস্থা আছে? Do you have trust on the judicial system?
প্রশাসন-ব্যবস্থার উপর আস্থা আছে কি না— প্রশ্ন করলে, ইদানীং অল্পাংশে হলেও কিছু মানুষ সভয়ে নিঃশব্দে নেতিবাচক ভঙ্গিতে মাথা নাড়েন। আবার কিছু মানুষ গলা নামিয়ে— চাপা স্বরে বলেন, ওকথা আর বলবেন না, প্রশাসন এখন রাজনীতির হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে!
কিন্তু যখনই প্রশ্ন করা হয়, —বিচার-ব্যবস্থার উপর আস্থা আছে? সঙ্গে সঙ্গে এক অজানা আশঙ্কায় অনেক উত্তর দাতারই মুখমন্ডলের চেহারা বদলে যায়। মনে যা-ই থাকুক, মুখে বলেন, —হ্যাঁ, বিচার-ব্যবস্থার উপর তার আস্থা আছে।
কিন্তু কেন এমন হবে? এ’ কেমন গণতন্ত্র— যেখানে মনের কথা মুখ ফুটে প্রকাশ করতে এত ভয় —এত সঙ্কোচ !
আমাদের বিচার-ব্যবস্থাকে যথোচিত সম্মান জানিয়েই বলি, মনুষ্য সৃষ্ট কোনো ব্যবস্থাই সর্বাংশে ত্রুটিমুক্ত হতে পারেনা। আর, কারো উপরেই সব মানুষ সর্বাংশে আস্থা রাখতে পারেনা, এবং অন্ধ-বিশ্বাস আর ভয়ে ভক্তির ক্ষেত্র ছাড়া, অথবা সন্ত্রাসের রাজত্ব ছাড়া কেউ বা কোনো ব্যবস্থাই সমালোচনার ঊর্ধে থাকতে পারেনা।
কিছু মানুষ আর কিছু ব্যবস্থার সমন্বয়েই বিচার-ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। আর বিচারকও আদপে একজন সাধারণ মানুষ। সেও কম-বেশি বিশ্বাস, আবেগ, মোহ-মায়া— সংস্কারে আবদ্ধ। বিচার ব্যবস্থা যদি ত্রুটি মুক্তই হোতো, —তাহলে অনেক সময় একই বিচার্য বিষয়ের উপর এক এক বিচারালয়ের বিচারের মধ্যে এত পার্থক্য সৃষ্টি হতোনা। বিচারকের রায়ের উপর যদি সবার আস্থাই থাকতো, তাহলে আর উচ্চ থেকে উচ্চতর বিচারালয়ে যাবার প্রয়োজন হতোনা।
বিচার ব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থা বৃদ্ধি করতে হলে, বিচার ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং সর্বাঙ্গীন উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরী। সাধারণ মানুষ যাতে অসাধু আইনব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে নাজেহাল না হয়, —সর্বসান্ত না হয়, সেদিকে সম্যক দৃষ্টি রাখা এবং বিচারপ্রার্থীদের আন্তরিকভাবে সহায়তা করার ব্যবস্থাও— বিচার ব্যবস্থার অঙ্গ হওয়া উচিৎ।
চারিদিকে যেভাবে ক্রমশ অন্যায়— অসহিষ্ণুতা— অমানুষিকতা বেড়ে চলেছে, এবং সেই সঙ্গে আইন ব্যবসার সাথে যুক্ত কিছু অসাধু মানুষ যে ভাবে বিচার ব্যবস্থাকে অসহযোগিতা করছে, —আর, তার ফলে বিচার ব্যবস্থা যেভাবে হিমসিম খাচ্ছে, এর প্রতিকার করতে হলে— বিচার ব্যবস্থাকে একেবারে ঢেলে সাজাতে হবে, —সময়োপযোগী করে তুলতে হবে। এছাড়া, সমস্ত বিচার ব্যবস্থার উপর নজর রাখার জন্যেও একটা উচ্চ পর্যায়ের ভালো আধুনিক ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
এই ক্ষুদ্র লেখায় আমি আমার এবং অনেক মানুষের মনোভাব ব্যক্ত করেছি মাত্র। তথ্যভারে ভারাক্রান্ত করতে চাইনি এই লেখনি। আপনারা আপনাদের মূল্যবান অভিমত এবং তথ্য দিয়ে এই লেখাটিকে সমৃদ্ধ করে তুলুন, এই কামনা করি। ধন্যবাদ।