মহাজীবন চলার পথে ঈশ্বর ও আমরা
- Sumeru Ray (MahaManas)
- Apr 8, 2015
- 2 min read
মহাজীবন চলার পথে ঈশ্বর ও আমরা
ঠিক আমাদের মতোই, সৃজন কালে— ঈশ্বর মনের মধ্যেও ছিলো দুটি মন, দুটি অংশ-মন। একটি হলো— সচেতন মন বা কিশোর মন, আর অপরটি হলো— অবচেতন মন বা শিশুচেতন মন। তার এই অন্ধ-আবেগ সর্বস্ব— যুক্তি-বিচার-কান্ডজ্ঞান বিহিন, মোহ-মায়াময় মনটিই হলো— মহামায়া ! আর তৎকালে আংশিক বিকশিত— আংশিক জাগ্রত সচেতন মনটিই হলো— মহামন বা মহামানস। একেই অনেকে মহাদেব নামে অভিহিত ক’রে থাকে।
আমাদের মধ্যে— যাদের মনরাজ্যে প্রধানতঃ অবচেতন মনের রাজত্ব বা প্রভুত্ব চলছে, সচেতন মন তেমন জাগ্রত না হওয়ায়— সে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছেনা, তারা ঈশ্বরের অবচেতন বা শিশুমন— মহামায়ার ভক্ত ও উপাসক।
আর যাদের সচেতন মন অনেকাংশে বিকশিত— অনেকটাই সক্রিয় এবং অবচেতন মনের উপর অনেকটা নিয়ন্ত্রণ লাভে সক্ষম, —তারা ঈশ্বরের সচেতন বা কিশোর মনের ভক্ত এবং যুক্তি-বিচার ও জ্ঞান-পথের পথিক। মনের মিল হলে তবেই না তাকে ভালোলাগে !
ঠিক আমাদের মতোই— ঈশ্বরও চেতনার ক্রমবিকাশের পথ ধরে সর্বদা এগিয়ে চলেছে। ঈশ্বর এখন আর পূর্বের সেই চেতনস্তরে নেই, এখন সে অনেক উচ্চ চেতন স্তরে অবস্থান করছে (মহাবাদ গ্রন্থে—সৃষ্টি কান্ড দ্রষ্টব্য)।
আমরা তার দ্বারা— তার অংশ হতে সৃষ্ট জীবগণ বর্তমানে মানব চেতন (ঈশ্বরের ক্ষেত্রে কিশোর চেতন) স্তরের মধ্যবর্তী বিভিন্ন সূক্ষ্ম চেতনস্তরে অবস্থান করছি, এবং ক্রমশ পূর্ণ বিকাশের লক্ষ্যে (জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে) এগিয়ে চলেছি, ঠিক ঈশ্বরের মতোই !
আমরা ঈশ্বরের অংশ হলেও, —স্বতন্ত্র চেতন সত্তা হওয়ার কারণে এবং আমাদেরকে প্রথম সৃজন কালে, ঈশ্বর আমাদের তৎকালীন চেতনস্তর থেকে অনেকটাই উচ্চ চেতনস্তরে অবস্থান করার ফলে, পৃথিবী থেকে বহুপূর্বে বিদায় নেওয়া আমাদের অগ্রজ বহু মানুষ— বহু উচ্চ চেতনস্তরে উন্নীত হয়ে— ক্রমে ঈশ্বরের নিকটবর্তী চেতন স্তরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।
বর্তমানে আমরা কিন্তু ঈশ্বরের দ্বারা সরাসরি সৃজিত নই। ঈশ্বর কৃত স্বয়ংক্রিয় সৃজন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে—পরম্পরাগত ভাবে আমাদের জন্ম হচ্ছে এখন। একসময় আমরাও ক্রমবিকাশের পথ ধরে ঈশ্বর চেতনস্তরে উপনীত হব। এটাই মহা জীবনচলা।
