ভুল বোঝাবুঝি— মানবসমাজের এক বড় সমস্যা
ভুল বোঝাবুঝি— মানবসমাজের এক বড় সমস্যা
শিক্ষাব্যবস্থা : ভুল বোঝাবুঝি এক বড় সমস্যা
উপন্যাস—গল্প—কবিতা—প্রবন্ধ সবাই লিখতে পারে না— সবাই লেখেনা। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে— যারা পড়ে, পাঠক-পাঠিকা বলা হয় যাদের, তাদের মধ্যে অনেকেই কিন্তু ঠিকমতো পড়তে পারেনা!
জ্ঞান-অভিজ্ঞতা এবং চেতনার স্বল্পতার কারণে, মন ও মস্তিষ্কের অক্ষমতার কারণে, এবং কিভাবে পড়তে হয়— তা’ না জানার ফলে, অনেকেই পড়ে এক— বোঝে আর এক! প’ড়ে তার সঠিক অর্থ বুঝতে পারেনা অনেকেই। নিজের নিজের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা —কল্পনা অনুযায়ী, নিজের মতো ক’রে— এক একজন এক একটা অর্থ ক’রে নেয়, এক এক রকমের চিত্র গ’ড়ে নেয় মনের মধ্যে।
মোটেই দুর্বোধ্য নয়, সহজ-সরল —সাধারণ লেখার ক্ষেত্রেও এইরূপ ঘটতে দেখা যায়। লেখক/লেখিকা যা বলতে চেয়েছে—যা বোঝাতে চেয়েছে, তা’ না বুঝে—এরা অন্য কিছু বোঝে—অন্য কিছু অর্থ ক’রে থাকে। ফলে, পঠন-পাঠনের উদ্দেশ্যটাই বিফল হয়ে যায়। এই ব্যাপারে— এর প্রতিকারের ব্যাপারে বিশেষ নজর না দিলে, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো সম্ভব হবেনা।
শুধু পড়া নয়— শোনার ক্ষেত্রেও অনুরূপ ঘটনা ঘটে থাকে। ‘ধান’ শুনতে ‘কান’ শোনা নয়। এক শুনে— তার আর এক অর্থ করা বা বোঝার ঘটনা আমাদের চারিপাশে সর্বদাই কোথাও না কোথাও ঘটে চলেছে। এই ভুল বোঝাবুঝিই আমাদের সমাজের এক বড় সমস্যা। এর থেকেই আরো বহু সমস্যা জন্ম নিচ্ছে। বহু ঘটনা—দুর্ঘটনা, বিশৃঙ্খলা—অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এর পিছনে অন্যমনষ্কতা—উদাসীনতা, মানসিক অস্থিরতা ও অসুস্থতা এবং আগ্রহের অভাব অনেকাংশেই দায়ী। তাই, এর প্রতিকার করতে হলে— বিভিন্ন উপায়ে মানুষের জ্ঞান ও চেতনার যেমন বৃদ্ধি ঘটাতে হবে, সেইসঙ্গে মস্তিষ্কের জড়তা, মনের অস্থিরতা ও অসুস্থতারও নিরসন করতে হবে। তা’ না করতে পারলে—‘অন্ধের হস্তি দর্শন’-ই হবে, লাভ হবে না কিছুই।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে, বিষয়-বস্তুতে আকর্ষণীয় রসের অভাব থাকে, বোঝানোর ত্রুটি বা অক্ষমতাও থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, যারা ভালো বুঝতে পারেনা, তারা ভালো বোঝাতেও পারেনা। তাই শিক্ষা ব্যবস্থা বা কার্যক্রমকে সফল ক’রে তুলতে হলে—চিকিৎসা বিজ্ঞান, পুষ্টি বিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিজ্ঞানের সাহায্য নিতে হবে আমাদের।